কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম বাধা দিবেন যেভাবে
পড়াশোনা চাকরী আনন্দ ফুর্তি এখন সবকিছুই ডিজিটালে পরিণত হয়েছে। তরুণ যুবক সহ বৃদ্ধ এবং শিশু কিশোররাও এখন সবসময় মোবাইল ফোন কিংবা কম্পিউটার নিয়ে ব্যস্ত থাকে। জন্মের পর থেকে ডিভাইস ধরে ধরে একসময় আসক্তে পরিণত হয় শিশুরা। ডিভাইসগুলো ধরে থাকলে কিভাবে সময় কাটে বলা যায়না। এতে সময় কাটছে কিন্তু চোখের উপর একটি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।
দীর্ঘসময় কম্পিউটার মোবাইল সহ বিভিন্ন ডিভাইস চালালে কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম নামের সমস্যা দেখা দেয়। মানুষের চোখের কর্নিয়ার ওপরে পাতলা পানির আস্তরণ থাকে যা চোখের পলক ফেলার সাথে সাথে কর্নিয়ার ওপর সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে। স্বাভাবিকভাবে চোখের পলক ফেলার হার প্রতি মিনিটে ১২ থেকে ১৫ বার হয়ে থাকে। কিন্তু আমরা মোবাইল কম্পিউটার চালানোর সময় আমরা চোখের পলক ফেলতে ভুলে যাই। একারনে পানির আস্তরণ খুব সহজে শুকিয়ে যায়। ফলে চোখের শুষ্কতা, চোখের জ্বালাপোড়া, চোখ ঝাপসা দেখা শুরু হয়।
দীর্ঘসময় ধরে মোবাইল কিংবা কম্পিউটার চালালে ঘাড়, মাথার পেশি, পিঠ ব্যাথা ও শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। চোখ দিয়ে দীর্ঘ সময় কাজ করলে চোখের উপর প্রভাব ফেলে চোখের ক্ষতি হয়। স্ক্রিনের সাথে দুরত্ব বজায় রেখে কাজ করলে কিংবা নিয়ম মেনে চললে চোখ সুস্থ থাকার সম্ভাবনা থাকে।
আমরা সবাই অধিকাংশ মানুষ কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম সমস্যায় ভোগে থাকি। তবে আমাদের এই সমস্যাটি প্রতিরোধ করার বিষয়ে জানতে হবে।
কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম দূর করার জন্য আমরা কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারি। কাজ করার সময় ২০ মিনিট পর পর ২০ ফিট দূরের কোন কিছুর দিকে ২০ সেকেন্ড করে তাকিয়ে থাকি। তাহলে আমাদের চোখের পেশী শিথিল হয় এবং আমাদের ক্লান্তি দূর হয়।
চোখের পলক ফেলার সাথে সাথে কর্নিয়ার পাতলা পানির আস্তরণ ছড়িয়ে পড়ে। এই পানির মাধ্যমে কর্নিয়া তার প্রয়োজনীয় অক্সিজেন গ্রহণ করে ফলে আমাদের কর্নিয়ার উপরিভাগ মসৃণ হয় পাসাপাশি দৃষ্টি স্বচ্ছ হয়।
আমরা সকলেই কিছুনাকিছু কাজে সবসময় ব্যস্ত থাকি। তবে কাজের ফাকে আমাদের সকলের কিছু সময় বিশ্রাম নেয়া ও হাটাচলা করা জরুরী। শরীরকে সুস্থ রাখতে পান করুন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি। পানির অভাবে চোখের শুষ্কতা দেখা দেয়।
টেবিল এবং চেয়ারের সামঞ্জস্যপূর্ণ ঠিক রেখে আমাদের কম্পিউটারে বসতে হবে। টেবিলে বসার পর যাতে পা মাটি পর্যন্ত পৌছায় এবং হাত সুবিধামতো টেবিলে সুবিধামতো ৬ড়ড়িয়ে রাখতে পারি। মাথা উচু করে ঘাড় মাথা উচু নিচু না করে যাতে কম্পিটারে স্ক্রিনের দিকে তাকাতে পারি। স্ক্রিন থেকে চোখ ৯০ সেন্টিমিটার দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে হবে।
কম আলো এবং বেশি আলো দুটোই চোখের জন্য ক্ষতিকর। স্ক্রিনে ফিল্টার ব্যবহার করলে চোখের জন্য ভালো। ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড খেয়ে চোখ ভালো রাখা সম্ভব। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চশমা ব্যবহার করতে পারেন।
বৃদ্ধদের পাশাপাশি শিশুরাও এখন কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম সমস্যায় ভোগছেন। শিশুরা যাতে এই সমস্যায় না ভোগে তাই দীর্ঘ সময় স্ক্রিনের সামনে না রেখে নির্দিষ্ট একটা সময় করে দিতে হবে এবং নির্দিষ্ট আলো বজায় রেখে চলতে হবে। তানাহলে চোখের শুষ্কতা চোখ বেকে যাওয়া কিংবা চোখের পাওয়ারের সমস্যা ভোগতে হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url