বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার উপায়
সুইজারল্যান্ডকে পৃথিবীর স্বর্গ বলা হয়ে থাকে। সুইজারল্যান্ডে অনেকে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ও কাজের ভিসা নিয়ে যেয়ে থাকেন। যারা সুইজারল্যান্ডে যেতে চান তাদের অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে কিভাবে খুব সহজে বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়া যায়। ইউরোপের দেশগুলো থেকে সুইজারল্যান্ডে যাওয়া অনেক সহজ হলেও বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড ভিসা পাওয়া অনেকটা কঠিন। আজকের পোস্টে বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার উপায়, সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি, সুইজারল্যান্ডে কাজের বেতন কত এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক:-
বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার উপায়
সুইজারল্যান্ডে সাধারণত কয়েক ধরনের ভিসা ব্যবহার করে খুব সহজেই যাওয়া যায়। অনেকে সুইজারল্যান্ড কাজের ভিসা ও টুরিস্ট ভিসা ব্যবহার করে দেশটিতে যেয়ে থাকেন। তবে সুইজারল্যান্ড কাজের ভিসা বা টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার জন্য কিছু শর্তাদি পালন করতে হয়। নিচে সুইজারল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগবে তা তুলে ধরা হলো:-
➡️ ভিসা আবেদনকারী ব্যক্তির পাসপোর্ট প্রয়োজন হবে। তাছাড়া পাসপোর্টে ন্যূনতম ৬ মাসের মেয়াদ থাকতে হবে।
➡️ ভিসা অ্যাপ্লিকেশন ফর্মটি সম্পূর্ণ পূরণ করে নিতে হবে।
➡️ এক কপি ছবি প্রয়োজন হবে এবং ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা হতে হবে।
➡️ সরকারি চাকরিজীবী বা কোন কোম্পানিতে চাকরি করে থাকেন তাহলে অফিস থেকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নিতে হবে।যারা ছাত্র রয়েছেন তারা ইউনিভার্সিটি অথবা কলেজ থেকে নিতে পারেন।
➡️ এনওসি প্রয়োজন হবে।
➡️ ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাগবে সেখানে ৬ লাখ টাকা দেখাতে হবে।
➡️ মেডিকেল রিপোর্ট সহ ইনকামের ট্যাক্স সার্টিফিকেট দেখাতে হবে।
➡️ সুইজারল্যান্ডে কোন স্থানগুলোতে ভ্রমণ করতে চান সেটা উল্লেখ করতে হবে।
➡️করোনা টিকা কার্ড লাগবে ও হোটেল বুকিং এর পেপার দিতে হবে।
যারা সুইজারল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা নিতে চান তারা এই ডকুমেন্টগুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই সুইজারল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা পেয়ে যাবেন।
আরও পড়ুন- মৌমাছির কামড়ের ঘরোয়া চিকিৎসা । মৌমাছি কামড়ালে কি লাগাতে হয়
সুইজারল্যান্ড কাজের ভিসা পাওয়ার নিয়ম
সুইজারল্যান্ডে কাজের ভিসা নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেকেই চেষ্টা করে থাকেন। কেননা সুইজারল্যান্ডে যারা শ্রমিক রয়েছেন তারা শান্তিতে কাজ করতে পারেন এবং সেখানে অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন।তাছাড়া সুইজারল্যান্ডে বেতন অনেক বেশি হওয়ায় ও উন্নত জীবনধারণের ব্যবস্থা থাকায় অনেকেই সুইজারল্যান্ডে যেতে চান।বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সুইজারল্যান্ড কাজের ভিসা নিয়ে কেউ যেতে পারবে না।
প্রথমে আপনাদেরকে হোম পারমিট ভিসা নিতে হবে। অনলাইনের মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের ওয়েবসাইটে কাজের সন্ধান করতে হবে। সেখান থেকে যদি কোন কাজের জন্য আবেদন করে থাকেন এবং আপনার আবেদনটি যদি গৃহীত হয় তাহলে তারাই আপনাকে কিছু ডকুমেন্টের মাধ্যমে ভিসা প্রদান করবেন। আর যদি কোন এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান তাহলে সরাসরি বায়োসেলের মাধ্যমে যেতে পারেন।
সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি
যারা সুইজারল্যান্ডে কাজের ভিসায় যেতে চান তারা অনেকেই সুইজারল্যান্ডে কোন কাজগুলোর চাহিদা বেশি এই বিষয়ে জানতে চান। এই কাজগুলোর ব্যাপারে যদি আগে থেকেই জানা যায় তাহলে বাংলাদেশ থেকে এই কাজগুলোর উপরে প্রশিক্ষণ নিয়ে যাওয়া যায়। সুইজারল্যান্ড যেহেতু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ একটি দেশ তাই সেখানে অনেক হোটেল ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে।
এই হোটেল ও রেস্টুরেন্ট গুলোতে কাজ করার জন্য প্রচুর সংখ্যক লোক প্রয়োজন হয়ে থাকে। যার কারণে সুইজারল্যান্ডে কাজের ভিসা নিয়ে যদি যেতে হয় তাহলে হোটেল ও রেস্টুরেন্টে হোটেল বয় হিসাবে কাজ করা যেতে পারে। সুইজারল্যান্ডে ড্রাইভিং কাজের ভালো চাহিদা রয়েছে তাই সেখানে গিয়ে ড্রাইভিং কাজ করার মাধ্যমে ভালো বেতন পাওয়া যেতে পারে।
সুইজারল্যান্ডে কাজের বেতন কেমন
সুইজারল্যান্ডে আইটি সেক্টরে কাজ করে থাকে তারা মাসে ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা বেতন পেয়ে থাকেন। সুইজারল্যান্ডে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং,গ্রাফিক্স ডিজাইন এই সকল কাজগুলোর উপরে যারা দীর্ঘদিন কাজ করছেন তারা অনেক বেশি টাকা বেতন পেয়ে থাকেন। তাছাড়া যারা হোটেল ও রেস্টুরেন্টে কাজ করে থাকে তারা মাসে এক থেকে দুই লক্ষ টাকা বেতন পেয়ে থাকেন। তাছাড়া এরা অনেক টিপস পেয়ে থাকেন যা হিসেব করলে মাসে তিন লাখ টাকার কাছে চলে যায়।
আরও পড়ুন- ওজন বাড়াতে স্বাস্থ্যকর খাবার । মোটা হওয়ার সহজ উপায়
সুইজারল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগবে
যেকোনো ব্যক্তি চাইলেই সুইজারল্যান্ড ভিসা পাবেন না। যেহেতু সুইজারল্যান্ড খুবই উন্নত একটি দেশ তাই সেখানে কাজের ভিসা নিয়ে যেতে হলে অবশ্যই নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকতে হবে। তাছাড়া সুইজারল্যান্ড কাজের ভিসা পেতে অনেক টাকা খরচ হয়ে থাকে। যারা বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যেতে চান সরকারিভাবে তাদের পাঁচ থেকে সাত লক্ষ টাকা খরচ হয়ে থাকে।
আর কোন ব্যক্তি যদি এজেন্সির মাধ্যমে সুইজারল্যান্ড যেতে চান তাহলে তার খরচ আসতে পারে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকার কাছাকাছি।আর কোন দালালের মাধ্যমে যদি সুইজারল্যান্ড ভিসা করে থাকেন তাহলে খরচ চলে আসবে ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকার মত।
সুইজারল্যান্ড টাকার মান কত । সুইজারল্যান্ড এর মুদ্রার নাম কি
সুইজারল্যান্ড এর মুদ্রা কে সাধারণত সুইস ফ্রাঙ্ক বলা হয়ে থাকে। বর্তমানে সুইজারল্যান্ডের এক টাকা সমান বাংলাদেশের ১২৩ টাকার কাছাকাছি। সুইজারল্যান্ডের ১০০ সুইস ফ্রাঙ্ক সমান ১২৩৭০ টাকার কাছাকাছি।
শেষ কথা- সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার স্বপ্ন অনেকের থাকলেও সঠিক গাইডলাইনের অভাবে সুইজারল্যান্ড যাওয়া হয়ে ওঠে না। তাছাড়া যখন সুইজারল্যান্ডে কাজের ভিসার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে অনেকেই সঠিক সময়ে আবেদন না করার কারণে সুইজারল্যান্ড কাজের ভিসা পান না। আবার অনেকেই আছেন যারা সুইজারল্যান্ড কাজের ভিসা কিভাবে পেতে হয় এই বিষয়ে জানেন না।আশা করি আজকের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে এই সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য পেয়েছেন। তারপরেও যদি এই নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url